Wednesday, 15 June 2016

ন্যাটো হচ্ছে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামরিক সংঘটন


ন্যাটো হচ্ছে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামরিক সংঘটন।মূলত ইউরোপিয় দেশ + আমেরিকা নিয়ে এই সংঘটন টি গঠিত হয়।এটি সামরিক ও রাজনৈতিক জোট, যেখানে ইউরোপের বেশীর ভাগ দেশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা রয়েছে।এই জোটের ঘোষিত একটি অন্যতম লক্ষ্য হল, সংস্থার সদস্য যে কোন দেশের ভৌগলিক সীমার প্রতিরক্ষা করা।ন্যাটো জোটের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক অঙ্গ হল উত্তর অটলান্টিক। উপদেষ্টা পরিষদ (ন্যাটো পরিষদ), যা সমস্ত সদস্য দেশের প্রতিনিধি দলের সমন্বয়ে তৈরী ও অধিবেশন জেনেরাল সেক্রেটারির সভাপতিত্বে হয়ে থাকে। ন্যাটো জোটের সদস্য দেশ গুলি হল: বেলজিয়াম, গ্রেট ব্রিটেন, ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, ইতালি, কানাডা, ল্যুক্সেমবার্গ,নেদারল্যান্ড, নরওয়ে, পর্তুগাল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, গ্রীস, তুরস্ক, জার্মানী,স্পেন।ন্যাটো জোটের ২টি অংশ রয়েছে।রাজনৈতিক এবং সামরিক। সামরিক পরিষদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণে দুটি এলাকা রয়েছে – ইউরোপ ও অটলান্টিল এলাকা।মূলত ন্যাটো জোটের নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন আমেরিকার সর্ব্বোচ্চ প্রধান সামরিক নেতা।ন্যাটো হচ্ছে আমেরিকা নামক মূদ্রাটির এপিট ও ঐপিট।আমেরিকা ছাড়া ন্যাটো,বুলেটবিহীন পিস্তলের সমান।মূলত ন্যাটো জোটটি সৃষ্টি করেছে আমেরিকা নিজেই।এখানে আমেরিকা এক ডিলে দুই পাখি মারতেছে।এক দিক দিয়ে তার যেমন অধিপত্ব বজায় থাকছে,অন্যদিক দিয়ে তার অস্ত্রের রমরমা ব্যাবসা চলতেছে।আপনি একটা বিষয় খেয়াল করুন এই জোটে কয়েকটি রাষ্ট্র ছাড়া,অন্য রাষ্ট্র গুলো সামরিক দিক দিয়ে তেমন শক্তিশালী না।এই রাষ্ট্র গুলোর কাছে আমেরিকা পারমাণবিক শক্তির বানিজ্য করে।কয়েকটি রাষ্ট্র কাছে তাদের পারমাণবিক বোমা রেখে এর বিনিময়ে তারা অর্থ হাতিয়ে নেয়।বর্তমানে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ জোট ন্যাটো এবং রাশিয়ার সম্পর্ক চরম পর্যায়ে। আজকের রাশিয়া কমিউনিস্ট শাসিত দেশ নয়, একটি খোলামেলা পুঁজিবাদী দেশ। তা সত্ত্বেও শুধু মাত্র নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ লুন্ঠনের জন্য রাশিয়াকে গিলে খেতে তৎপর ন্যাটো তথা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ।ন্যাটোর উসকানি এই সংকটের কারন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম রাশিয়ার সীমান্তের অতি কাছে ন্যাটোর সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ন্যাটো মহড়ার নাম দিয়েছে ‘অপারেশন এনাকোন্ডা’।এই মহড়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ হাজার, পোল্যান্ডের ১২ হাজার,ব্রিটেনের৮০০ সৈন্য অংশ নিচ্ছে।এছাড়াও ন্যাটোর প্রতি মিত্র ভাবাপন্ন বিভিন্ন দেশের সেনারা এ মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। ন্যাটোর এই মহড়ায় সর্বমোট ৩১ হাজার সেনা অংশ নিচ্ছে। ৩০০০ সাঁজোয়া যান, ১০৫ টি জঙ্গি বিমান এবং ১২ টি অত্যাধুনিক রণতরী,তাছাড়া আরও বিভিন্ন যুদ্ধ জাহাজ এবং সাবমেরিন এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে।এছাড়া এই মহড়ায় ইলোকট্রনিক ওয়ারপেয়ার সিস্টেমের মহড়া চালানো হবে। যার নেতৃত্ব দেবে পোলিশ লে. জে. মারেক টমাসজিকি। কিন্তু কেন? বিশ্ব কি এমন জটিল পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে গেলো যে, ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সাধারণ জনগণের কষ্টার্জিত ট্যাক্সের পয়সা খরচ করে এরকম বিপুল ব্যয়ের একটি সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত করতে হবে! এ মহড়ার পক্ষে কোনো যুক্তি মার্কিন শাসকশ্রেণির কাছে নেই। ন্যাটোর এই মহড়ায় শতাব্দীর ইতিহাস কলঙ্কিত করে জার্মান ট্যাঙ্ক পোল্যান্ডে ঢুকবে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিজয়ের পর এপর্যন্ত জার্মান সামরিক বাহিনী কিংবা তাদের কোনো যুদ্ধযান পোল্যান্ডে প্রবেশ করতে পারেনি। আজ পোল্যান্ডের আত্মমর্যাদাহীন শাসকগোষ্ঠীর নতজানু নীতির কারণে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি আজ পোল্যান্ডের মাটিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে।রাশিয়ার বিরুদ্ধে ন্যাটোর এ অব্যাহত উস্কানি পরিস্থিতিকে সবমিলিয়ে কোন পর্যায়ে নিয়ে যাবে?।উত্তর হল অনিবার্য সংঘাতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া এবং ন্যাটো।মূলত ন্যাটো তা চায় যা তারা মধ্যপ্রাচ্যে এবং আফ্রিকাতে করছে। ♦♦♦কিন্তু তাদেরও জানা উচিত রাশিয়া মধ্যপ্রাচ্য কিংবা আফ্রিকা কোনটাও না।রাশিয়াকে কাবু করা এতটা সোজা না।এক কথায় অসম্ভব।তার প্রমাণ মার্কিন সহকারী প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বক্তব্য কিংবা থিংক ট্যাংক বক্তব্য। তাদের কথা অনুযায়ী রাশিয়ার সাথে ন্যাটোর যুদ্ধ লাগলে ন্যাটোর হার অনিবার্য।সোভিয়েত ইউনিয়নের সেই হারানো গৌরব রাশিয়া আবার ফিরে পেতে চলছে।অবশ্য তাদের কথার যুক্তিয়ও রয়েছে।বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার তাদের দখলেই রয়েছে।তাছাড়া মিসাইল এবং সাবমেরিন প্রযুক্তিতে তারা ন্যাটো থেকে অনেক এগিয়ে।তাদের বহরে রয়েছে অজ্ঞাত সংখ্যক আর-৩৬,আর-২৪ ইয়ারস,আর-৫৬ বুলবা, ট্রিপল এমের মত অত্যাধুনিক আইসিবিএম এবং এসএলবিএম।রয়েছে ইয়াসেন,টাইফুনেরমত উন্নত সাবমেরিন ।তাছাড়া তাদের নতুন আইসিবিএম সারমাত শীঘ্রই সার্ভিসে আসছে।আবশ্য রাশিয়ার অর্থনীতি ন্যাটোর মত শক্তিশালী না।তাছাড়া এয়ারক্রাফট প্রযুক্তির দিক থেকেও তারা মার্কিনীদের থেকে বেশ পিছিয়ে।তার পরও তারা ২০১৭ সালের প্রথম দিকে টি-৫০ সার্ভিসে আনবে।পরিশেষে বলব যুদ্ধ কখনো শান্তি বয়ে আনে না। ★★★SA

No comments: