১৯৮৭ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন সামরিক বাহিনী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা স্যাটালাইটের নজরদারী এড়াবার জন্য তাদের নিজস্ব কৌশলগত পারমানবিক অস্ত্র সমৃদ্ধ আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) উৎক্ষেপনে সাইলো বেসড ভূমি, মোবাইল লাউঞ্চার সিস্টেম ও সাবমেরিনের পাশাপাশি তাদের সুদীর্ঘ প্রায় ৮০০০০ কিলোমিটারেরও বেশি ট্রান্স সাইবেরিয়ান রেলপথের সুবিধাকে কাজে লাগাতে সভিয়েত সরকার অত্যান্ত গোপনে নুক ট্রেন নামে একটি মহা প্রকল্প গ্রহণ করে। মুলত নুক ট্রেন প্রকল্পের আওতায় ১২টি রেলের প্রতিটিতে তিনটি করে ১০০০০ কিলোমিটার পাল্লার টি-২৩ (এসএস-24) আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম), সেলফ প্রোটেকশন গান এবং শক্তিশালী রাডার সিস্টেম স্থাপন করা হয়। এছাড়া নুক ট্রেনের প্রতিটি আইসিবিএম কে যে কোন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে হাই কমান্ডের নির্দেশে কয়েক মিনিটের মধ্যেই নিদিষ্ট লক্ষবস্তুতে অঘাত করার জন্য উতক্ষেপণের উপযোগী করে বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল। আসলে স্নায়ু যুদ্ধ বা কোল্ড ওয়ার শেষে পরবর্তীতে ২০০৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে রাশিয়া পারমানবিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরন স্ট্রাট-2 চুক্তির আওতায় রাশিয়ার পুতিন সরকার সকল ধরণের ট্রেন বেসড (নুকট্রেন) আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপনের ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়। কিন্তু সাম্প্রিতিক সময়ে ইউক্রেন সংকট ও মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গি দমন এবং আসাদ সরকার নীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে রাশিয়া এক ধরণের নতুন করে ঠান্ডা যুদ্ধের আবহ তৈরি হয়েছে। যার পেক্ষাপটে রাশিয়া ভবিষ্যতে যে কোন ধরণের পারমানবিক যূদ্ধের হুমকি মোকাবেলায় এবং পরিবর্তনশীল অস্থিতিশীল অবস্থার পেক্ষাপটে নতুন করে "Barguzing" ট্রেন নামে রেলওয়ে ভিত্তিক আইসিবিএম সজ্জিত অত্যাধুনিক রেল ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে যা নিশ্চিতভাবেই ভূমি বা সাবমেরিন থেকে আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সমতুল্য। মুলত নতুন এই রেলগুলো প্রতিদিন গড়ে ১০০০ কিলোমিটারের দীর্ঘ পথ বিরামহীনভাবে অতিক্রম করে সারা দেশব্যাপী যে কোন সুবিধাজনক ও নিরাপদ স্থানে স্থাপন করা ও হাইকমান্ডের নিদের্শনা মোতাবেক এক মিনিটের মধ্যে সুনিদিষ্ট লক্ষবস্তুতে আঘাত করার জন্য উৎক্ষেপনের উপযোগী করে বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি এ জাতীয় ট্রেনে ৬টি করে টি-২৩ আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) স্থাপন করা হবে। এখানে প্রকাশ থাকে যে, ১০০০০ কিলোমিটার পাল্লার প্রতিটি টি-২৩ বা এসএস-২৪ আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দশটি করে পারমাণবিক ওভারহেড বহণ করতে সক্ষম এবঽ তা ভিন্ন ভিন্ন একাধিক লক্ষবস্তুতে অত্যান্ত নিখুতভাবে আঘাত করার উপযোগী হবে বলে মত প্রকাশ করেছেন রাশিয়ার সামরিক বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে "Barguzing” রেলগুলোকে সম্পুর্নভাবে স্টিলথ টেকনোলজি এবং ইলেকট্রনিকন্স ওয়ারফার সমৃদ্ধ করে তৈরি করা হবে এবং পাশাপাশি অত্যাধুনিক রাডার সিস্টেম সহ নিজস্ব শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বারগুনিং ট্রেনে শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে খুব সম্ভবত এস-৪০০ সারফেস টু এয়ার মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম সংযোজন করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে রাশিয়া আগামী আট থেকে দশ বছরের মধ্যে কমপক্ষে ছয় রেজিমেন্ট এ জাতীয় রেল ব্যবস্থা সমগ্র ট্রান্স সাইবেরিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কে অন্তভুক্ত করতে বদ্ধপরিকর।
বিশ্বের সব সামরিক খবরাখবর পেতে এই পেইজে লাইক দিন। ধন্যবাদ। Our FB Page https://m.facebook.com/worldarmsnews https://m.facebook.com/TeamIDNB
Monday, 20 June 2016
Barguzing
১৯৮৭ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন সামরিক বাহিনী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা স্যাটালাইটের নজরদারী এড়াবার জন্য তাদের নিজস্ব কৌশলগত পারমানবিক অস্ত্র সমৃদ্ধ আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) উৎক্ষেপনে সাইলো বেসড ভূমি, মোবাইল লাউঞ্চার সিস্টেম ও সাবমেরিনের পাশাপাশি তাদের সুদীর্ঘ প্রায় ৮০০০০ কিলোমিটারেরও বেশি ট্রান্স সাইবেরিয়ান রেলপথের সুবিধাকে কাজে লাগাতে সভিয়েত সরকার অত্যান্ত গোপনে নুক ট্রেন নামে একটি মহা প্রকল্প গ্রহণ করে। মুলত নুক ট্রেন প্রকল্পের আওতায় ১২টি রেলের প্রতিটিতে তিনটি করে ১০০০০ কিলোমিটার পাল্লার টি-২৩ (এসএস-24) আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম), সেলফ প্রোটেকশন গান এবং শক্তিশালী রাডার সিস্টেম স্থাপন করা হয়। এছাড়া নুক ট্রেনের প্রতিটি আইসিবিএম কে যে কোন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে হাই কমান্ডের নির্দেশে কয়েক মিনিটের মধ্যেই নিদিষ্ট লক্ষবস্তুতে অঘাত করার জন্য উতক্ষেপণের উপযোগী করে বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল। আসলে স্নায়ু যুদ্ধ বা কোল্ড ওয়ার শেষে পরবর্তীতে ২০০৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে রাশিয়া পারমানবিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরন স্ট্রাট-2 চুক্তির আওতায় রাশিয়ার পুতিন সরকার সকল ধরণের ট্রেন বেসড (নুকট্রেন) আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপনের ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়। কিন্তু সাম্প্রিতিক সময়ে ইউক্রেন সংকট ও মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গি দমন এবং আসাদ সরকার নীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে রাশিয়া এক ধরণের নতুন করে ঠান্ডা যুদ্ধের আবহ তৈরি হয়েছে। যার পেক্ষাপটে রাশিয়া ভবিষ্যতে যে কোন ধরণের পারমানবিক যূদ্ধের হুমকি মোকাবেলায় এবং পরিবর্তনশীল অস্থিতিশীল অবস্থার পেক্ষাপটে নতুন করে "Barguzing" ট্রেন নামে রেলওয়ে ভিত্তিক আইসিবিএম সজ্জিত অত্যাধুনিক রেল ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে যা নিশ্চিতভাবেই ভূমি বা সাবমেরিন থেকে আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সমতুল্য। মুলত নতুন এই রেলগুলো প্রতিদিন গড়ে ১০০০ কিলোমিটারের দীর্ঘ পথ বিরামহীনভাবে অতিক্রম করে সারা দেশব্যাপী যে কোন সুবিধাজনক ও নিরাপদ স্থানে স্থাপন করা ও হাইকমান্ডের নিদের্শনা মোতাবেক এক মিনিটের মধ্যে সুনিদিষ্ট লক্ষবস্তুতে আঘাত করার জন্য উৎক্ষেপনের উপযোগী করে বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি এ জাতীয় ট্রেনে ৬টি করে টি-২৩ আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) স্থাপন করা হবে। এখানে প্রকাশ থাকে যে, ১০০০০ কিলোমিটার পাল্লার প্রতিটি টি-২৩ বা এসএস-২৪ আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দশটি করে পারমাণবিক ওভারহেড বহণ করতে সক্ষম এবঽ তা ভিন্ন ভিন্ন একাধিক লক্ষবস্তুতে অত্যান্ত নিখুতভাবে আঘাত করার উপযোগী হবে বলে মত প্রকাশ করেছেন রাশিয়ার সামরিক বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে "Barguzing” রেলগুলোকে সম্পুর্নভাবে স্টিলথ টেকনোলজি এবং ইলেকট্রনিকন্স ওয়ারফার সমৃদ্ধ করে তৈরি করা হবে এবং পাশাপাশি অত্যাধুনিক রাডার সিস্টেম সহ নিজস্ব শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বারগুনিং ট্রেনে শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে খুব সম্ভবত এস-৪০০ সারফেস টু এয়ার মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম সংযোজন করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে রাশিয়া আগামী আট থেকে দশ বছরের মধ্যে কমপক্ষে ছয় রেজিমেন্ট এ জাতীয় রেল ব্যবস্থা সমগ্র ট্রান্স সাইবেরিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কে অন্তভুক্ত করতে বদ্ধপরিকর।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)


No comments:
Post a Comment