Saturday, 23 July 2016

বৃষ্টি নামাবে লেজার রশ্মি

লেজার র‌শ্মি ১ম পর্ব অামাদের জীবনে প্রায় সব ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে লেজার রশ্মি। শুরুর দিকে সিডি বা ডিভিডিতে ছোট ছোট লেজার রশ্মি ব্যবহার করা হতো। এরপর লেজার রশ্মি ব্যবহার হারের পরিধি প্রসারিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আধুনিক বিশ্বে লেজার প্রায় সর্বেেত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। লেজার যখন প্রথম আবিষ্কার করা হয়, তখন কেউ চিন্তা করেনি এর ব্যবহার কী হবে। শুরুতে লেজার রশ্মিকে রাডার-ব্যবস্থা অথবা সামরিক কাজে ব্যবহার করা হতো। ইংরেজি অর লেজার (LASER) এর পূর্ণ শব্দটি হলো Light Amplification by Stimulated Emission Radiation. . অর্থাৎ উত্তেজিত বিকিরণের সাহায্যে আলোক বিবর্ধন। সাধারণ আলোতে বিভিন্ন মাপের তরঙ্গ থাকে। একই বর্ণের আলোতে একই মাপের তরঙ্গ থাকলেও তারা বিভিন্ন তলে চলে। কিন্তু লেজারে সব তরঙ্গই হয় একই মাপের এবং তারা চলে একই তলে। লেজার রশ্মি অত্যন্ত ঘন সংবদ্ধ একমুখী বলে তা অনেক পথ অতিক্রম করতে পারে এবং এরা মাত্র কয়েক মাইক্রন (১ মাইক্রন= ১০-৩ মি. মি.) চওড়া। এ জন্য এতে প্রচণ্ড তাপশক্তি সঞ্চার করা সম্ভব হয় এবং তাপমাত্রা সূর্যের তাপমাত্রার চেয়েও বেশি হয়। লেজার রশ্মি দিয়ে মানুষের একটা চুলকেও ছিদ্র করা সম্ভব। ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রতিদিনের মানুষের জীবনে যে তথ্য আদান-প্রদান করা হয়, তার বিশাল একটি অংশ লেজার রশ্মির মাধ্যমে আদান-প্রদান করা হয়। এ ছাড়া প্রযুক্তির বিভিন্ন আবিষ্কার কম্পিউটার ডিস্ক থেকে শুরু করে অপটিক্যাল ডিস্ক সবখানেই আছে লেজারের অবদান। আমাদের টেলিভিশন থেকে শুরু করে গাড়ির দরজা-জানালা কাটা হয় লেজারের মাধ্যমে। বিমান তৈরির উপকরণও সঠিক মাপে কাটতে ব্যবহার করা হয় লেজার রশ্মি। অর্ধশত বছর আগের লেজার রশ্মির আবিষ্কার সম্পর্কে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়েরফটোকিন গবেষক টমাস বেয়াড় জানিয়েছেন, লেজার রশ্মি প্রথম আসে ষাটের দশকের দিকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিভিন্ন গবেষণার সুবিধার্থে লেজার আবিষ্কার করা হয়। মূলত ভালো একটি রাডার-ব্যবস্থা তৈরিতে উচ্চ একটি ফ্রিকোয়েন্সি আছে, এমন বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে গিয়ে গবেষকদের মাথায় লেজার রশ্মির ধারণা আসে। শুরুতেই বিপুল পরিমাণ অর্থ এ গবেষণায় ব্যয় করা হয়। রাডার-ব্যবস্থায়মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করা হয়, একে আরো উন্নত করতে নতুন এক ধরনের ব্যবস্থা আবিষ্কার করা হয়। আর গবেষকেরা তখন বুঝতে পারেন, একই পদ্ধতি দৃশ্যমান আলোর ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা সম্ভব। এই গবেষণা লেজার আবিষ্কারের পথ খুলে দেয়। আর বর্তমানে মানবজীবনে লেজারের প্রতিনিয়ত ব্যবহার দেখতে পারলে এর আবিষ্কার কর্তারা অবাক হতেন। আধুনিক জীবনে আপনি যা কিছু ব্যবহার করেন এর সাথে কোনো না কোনোভাবে লেজার জড়িয়ে আছে। আলোকের এক অসাধারণ অবস্থান হচ্ছে লেজার। সহজ কথায় বলতে গেলে বলা যায়, এটি এক ধরনের বাল্ব, যেখানে আলো খুবই ঘনীভূত অবস্থায় থাকে। অর্কেস্ট্রের শুরুতে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজানো হয় পরীার জন্য। সেখানে একেক বাদ্য একেকভাবে বাজে। সাধারণ আলো তেমনি। যেখানে অনেক রঙ অনেক দিকে আলো ছোটে। আবার বাদ্যযন্ত্র যখন নির্দিষ্ট বাজনা বাজায়, তখন সবাই এটা টিউনে বাজায়। লেজারও অনেকটা তাই, সেখানে সবকিছু বাদ দিয়ে এক ধরনের আলো তৈরি হয়। আলোর সবচেয়ে সমৃদ্ধ উৎস হচ্ছে লেজার। সব জায়গায় সব সময় এই আলোকরশ্মি একই রকম কাজ করে। এটা ফোটন কণার এমন ধরনের অবস্থা, তাকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়। এ কারণে মানুষের কল্পনার বিভিন্ন স্থানে এই আলোকরশ্মি মানে লেজার অবস্থান করে নিয়েছে। আধুনিককালে বিভিন্ন অপারেশনের কাজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে লেজার। আবার জিঙ্ক নির্ণয় করার ক্ষেত্রে আমাদের অনেক সময় বাঁচিয়ে দিচ্ছে। (‌লেজার র‌শ্মি ব্যবহা‌রের উপর ধারাবা‌হিকভা‌বে৬টা পোস্ট করা হ‌বে)

No comments: