ভারতীয় ব্যালেস্টিক মিসাইল ডিফেন্স প্রোগ্রাম
-----------------------------------------------------------------------
ভারতীয় ব্যালেস্টিক মিসাইল ডিফেন্স প্রোগ্রাম হলো একটি কার্যক্রম যার উদ্দেশ্য হলো দেশে বহুস্তরীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা যার মাধ্যমে ধেয়ে আসা শত্রুপক্ষের।ব্যালেস্টিক মিসাইল আকাশেই ধ্বংস করা যায়।
.
★★ প্রথম পর্যায়
১৯৯৯ এ কার্গিল যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে পাকিস্থানের পারমানবিক মিসাইল হুমকির কথা মাথায় রেখে কার্যক্রমটি শুরু হয়। প্রায় ৪০ টি সরকারি ও বেসরকারী কোম্পানি ও সংস্থা মিলে শুরু এই কার্যক্রম যেগুলি হলো ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড, ভারত ডাইনামিক্স লিমিটেড, অস্ত্র মাইক্রোওয়েভ, ASL, L & T , ভেম টেকনোলজিস ও কেল ট্যাক এছাড়াও অনেক কোম্পানি এই প্রজেটের সাথে যুক্ত হয়। এই ব্যবস্থার ব্যবহৃত রাডার তৈরীর নেতৃত্ব দেয় ইলেকট্রনিক্স এন্ড রাডার ডেভেলপমেন্ট এস্টাব্লিশমেন্ট(LRDE) । প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন ল্যাবরেটরি (DRDL ) মিসাইল এর জন্য মিশন নিয়ন্ত্রণ সফ্টওয়্যার বিকশিত করে । ইমারত (RCI) বিকশিত করে নেভিগেসন, ইলেকট্রমেকানিকাল অকুজিসন সিস্টেম ও একটিভ রাডার সীকার । অ্যাডভান্সড সিস্টেম ল্যাবরেটরি (ASL) মিসাইল এর মোটর, জেট এর পাখা এবং কাঠামো তৈরী করে। হাই এনার্জি সামগ্রী রিসার্চ ল্যাবরেটরি (HEMRL) ক্ষেপণাস্ত্রর জন্য প্রোপেলান্ট সরবরাহ করে।
.
এই পর্যায়ে দ্বিস্তরীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অর্থাৎ দুটি দুই ধরনের মিসাইল তৈরীর কার্যক্রম নেওয়া হয়। প্রথম টি হলো অ্যাডভান্সড এয়ার ডিফেন্স (AAD) / আশ্বিন ব্যালেস্টিক মিসাইল ইন্টারসেপ্টার এটি বায়ুমন্ডলের ভিতরে থাকা আগত মিসাইল ধ্বংস করার জন্য তৈরী করা হয়েছে। দ্বিতীয় টি হল পৃথ্বী এয়ার ডিফেন্স(PAD) / প্রদ্যুম্ন ব্যালেস্টিক মিসাইল ইন্টারসেপ্টার এটি বায়ুমন্ডলের বাইরে থেকে আসা মিসাইল ধ্বংস করার জন্য তৈরী করা হয়েছে।
.
§§§ অ্যাডভান্সড এয়ার ডিফেন্স (AAD) / আশ্বিন বাল্লিস্তিক মিসাইল ইন্টারসেপ্টার
-----------------------------------------------------------------------
ইহা একটি ডি.আর.ডি.ও. দ্বারা বিকশিত শুষ্ক জ্বালানী দ্বারা চালিত সিঙ্গেল স্টেজ ব্যালেস্টিক মিসাইল প্রতিরোধী মিসাইল।এটি সর্বোচ্চ ৩০ কি.মি. উচ্চতায় ১৫০-২০০ কি.মি দুরে সর্বোচ্চ ৪.৫ মাঁক গতিতে যেতে সক্ষম । এই মিসাইলটি প্রথমিক পর্যায়ে ইন্টারনাল নেভিগেসন সিস্টেম পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রিত হয় অর্থাৎ এই পর্যায়ে ভূমিতে অবস্তিত লং রেন্জ রাডার দ্বারা নযন্ত্রিত হয় তাই এই পর্যায়ে প্রয়োজন মত পরিবর্তন সম্ভব, টার্মিনাল স্টেজ অর্থাৎ অন্তিম পর্যায়ে এক্টিভ রাডার হোমিং দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় অর্থাৎ মিসাইল এর ভিতর অবস্থিত রাডার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় ফলে নির্ভুল ভাবে লক্ষে আঘাত করতে পারে। ২০০৭ সালে ওড়িশা উপকূলে এটিকে প্রথম টেস্ট ফায়ার করা হয় এবং সফল ভাবে পৃথ্বী-২ ব্যালেস্টিক মিসাইলটিকে ইন্টারসেপ্ট ও ধ্বংস করতে সক্ষম হয়। ইতিমধ্যে এই মিসাইল সিস্টেমটিতে অনেক উন্নতি সাধন করার পর কিছুদিন আগে শেষ সফল টেস্ট সম্পন্ন করা হয়, ২০১৬ সালের শেষ দিকে এটি ভারতীয় মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম এ যুক্ত হবে।
.
§§§ পৃথ্বী এয়ার ডিফেন্স(PAD) / প্রদ্যুম্ন ব্যালেস্টিক মিসাইল ইন্টারসেপ্টার
----------------------------------------------------------------------
ইহা পৃথ্বী ব্যালেস্টিক মিসাইল ওপর ভিত্তি করে ডি.আর.ডি.ও. দ্বারা তৈরি দুই স্টেজ বালেস্তিক মিসাইল প্রতিরোধী মিসাইল। প্রথম স্টেজে শুষ্ক জ্বালানী দ্বারা চালিত ও দ্বিতীয় স্টেজে তরল জ্বালানী দ্বারা চালিত হয়। মিসাইলটিতে মানউভার থ্রাস্ট সিস্টেম ব্যবহার করা হয় যেটা সাধারণত মহাকাশ যানে ব্যবহার করা হয় ফলে মিসাইলটি ৮০ কি.মি. উচ্চতায়ও মারাত্মক গতী ও মানেউভার অর্জন করতে সক্ষম।এটি সর্বোচ্চ ৮০ কি.মি. উচ্চতায় ২০০০ কি.মি দুরে সর্বোচ্চ ৫ ম্যাক গতীতে যেতে সক্ষম ।এই মিসাইলটি প্রথমিক পর্যায়ে ইন্টারনাল নেভিগেশন সিস্টেম পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রিত হয় অর্থাৎ এই পর্যায়ে ভূমিতে অবস্তিত লং রেন্জ রাডার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় তাই এই পর্যায়ে প্রয়োজন মত পরিবর্তন সম্ভব, টার্মিনাল স্টেজ অর্থাৎ অন্তিম পর্যায়ে এক্টিভ রাডার হোমিং দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় অর্থাৎ মিসাইল এর ভিতর অবস্থিত রাডার দ্বারা নযন্ত্রিত হয় ফলে নির্ভুল ভাবে লক্ষে আঘাত করতে পারে। এই মিসাইলটি ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি সফল টেস্ট সম্পন্ন করেছে এবং মনে করা হচ্ছে আরোও কয়েক টি সফল টেস্টের পর আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই সরকারিভাবে (!!) নিযুক্ত হবে।
.
বিঃদ্রঃ- এই সিস্টেমের সাথে কেউ দয়া করে S-400 -র তুলনা করবেন না। দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন সিস্টেম। S-400 মেনলি অ্যান্টি এয়ারক্রাফট, ড্রোন, হেলিকপ্টার ও কিছু ক্ষেত্রে অ্যান্টি ব্যালেস্টিক মিসাইল (IRBM পর্যন্ত)। সেখানে AAD/PAD ডেডিকেটেড অ্যান্টি ব্যালেস্টিক মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম এটা দিয়ে এয়ারক্রাফট, হেলিকপ্টার ইত্যাদি ধ্বংসের কাজে ব্যবহার করা যাবে না।

No comments:
Post a Comment